উপকরণ – ভাল পুরানো পেশোয়ারী আতপ চাল ১ কেজি। তিন কেজি মাংস। পেঁয়াজ ৭০০ গ্রাম, আদাবাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুন মাঝারি মাপের দুটো, লঙ্কা ঝাল বুঝে, টক দই ২০০ গ্রাম, তেলতেল রান্নার একটা অবশ্য প্রয়োজনীয় উপাদান। রান্নার তেল অনেক রকম হয় যেমন সরষের তেল, বাদাম তেল, সূর্যমুখীর তেল, সোয়াবিনের তেল, রাইসঅয়েল। সরষের তেল ছাড়া অন্য তেলগুলিতে রং বা গন্ধ বিশেষ থাকে না। তাই কোনো বিশেষ রান্না ছাড়া সব রান্নাতে সাদা তেলই ভাল। বর্তমানে স্বাস্থ্যের কারণে ঘি-এর বদলে এই সাদা তেলই ব্যবহার হচ্ছে। More বা ঘি ৬০০ গ্রাম কিছু কম দিলেও চলে, কাজু বাদাম ১০০ গ্রাম, কিস্মিস্ ১০০ গ্রাম (এগুলোর পরিমাণ কম বেশি করা যায়), তেজপাতা ১২-১৩টা, হলুদহলুদ বাঙালির রান্নার একটি প্রধান মশলা। শরীরের পক্ষে খুবই উপকারি। রান্নার সময় হলুদ প্রথমের দিকেই দিতে হয়। প্রথমে দিতে ভুলে গিয়ে নামানোর আগে মনে পড়ে গেল আর তখনই একটু হলুদ দিয়ে দিলাম সেটা খুব মুশকিলের কারণ তখন সব রান্নাটাই খারাপ হয়ে যায়। More ২ চা চামচ, নুনসব তরকারি রান্নাতেই নুন দেওয়া একান্তই দরকার। পরিমাণ মতো নুন রান্নার প্রথমের দিকেই দেওয়া উচিত, তাতে সমস্ত আনাজ তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। More পরিমাণ মতো, চিনিঅধিকাংশ তরকারিতে মিষ্টতা আনতে চিনি দিতে হয় কিন্তু যদি আনাজ পর্যাপ্ত পরিমাণে সিদ্ধ হওয়া আগে চিনি দিয়ে দেওয়া হয় তখন আনাজ আর সিদ্ধ হতে চায় না। সুতরাং এটা মনে রাখা দরকার তরকারিতে যদি মিষ্টতা আনার দরকার হয় তা হলে আনাজ সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরই চিনি দিতে হয়। More দেয় না তবে মাংসতে অল্প যদি ভাল লাগে দেওয়া যায়। গন্ধের জন্যে গরম মশলা গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, পোলাও-এর মশলা গুঁড়ো ৩ টেবিল চামচ, জাফরান ২ চা চামচ, (না পাওয়া গেলে ক্ষতি নেই) গোলাপ জল বড়ো কাপের এক কাপ, কেওড়ার জল বড়ো কাপের এক কাপ।
প্রণালী – প্রথমে মাংস দু ভাগে ভাগ করে রাখুন। একদিকে হাড় ছাড়া মাংস এক কেজি আর একদিকে বাকি দুই কেজি। মাংস ধুয়ে আলাাদা আলাদা পাত্রে রাখুন। এবার পেঁয়াজ আদা দু চামচ রসুন, লঙ্কা সব ভাল করে বেটে নিন। এই বাটনা থেকে ছেঁকে খানিকটা রস বার করে নিন। এমন পরিমাণ রস নেবেন যাতে সেটা এক কেজি মাংসের উপযুক্ত হয়। রসে যেন খিঁচ না থাকে। এই রস এক কেজি মাংসে ঢেলে দিন।
আন্দাজ মতো নুনসব তরকারি রান্নাতেই নুন দেওয়া একান্তই দরকার। পরিমাণ মতো নুন রান্নার প্রথমের দিকেই দেওয়া উচিত, তাতে সমস্ত আনাজ তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। More দিয়ে এক কেজি মাংস ভিজতে দিন। বাকি দু কেজি মাংস চাপের মতো করে রান্না করুন (আগে লেখা আছে)। এই চাপের মতো করে রান্না মাংস বিরিয়ানির সঙ্গে পরিবেশন করতে হয়।
এবার বিরিয়ানি – এক কেজি চালের সঙ্গে দু কেজি মাংস দিলে ভাল হয়। আমি এখানে এক কেজি মাংসের কথা লিখেছি। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি দু কেজি দিতে হয় তা হলে সেই মতো মশলা বাড়িয়ে নিতে হবে।
চাল ভাল করে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে (ঘি ভাতের বেলায় যেমন লিখেছি)। ধোয়া শুকনো চাল আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, অল্প নুনসব তরকারি রান্নাতেই নুন দেওয়া একান্তই দরকার। পরিমাণ মতো নুন রান্নার প্রথমের দিকেই দেওয়া উচিত, তাতে সমস্ত আনাজ তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। More, ১ টেবিল চামচ গরম মশলা মাখিয়ে রাখুন। কাজুবাদাম ভেজে রাখুন। শুধু মশলা আর নুনসব তরকারি রান্নাতেই নুন দেওয়া একান্তই দরকার। পরিমাণ মতো নুন রান্নার প্রথমের দিকেই দেওয়া উচিত, তাতে সমস্ত আনাজ তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। More দিয়ে ভেজানো মাংস কুকারে সিদ্ধ করে নিন। বেশি সিদ্ধ করবেন না যাতে গলে যায়। কুকারে দশ মিনিট রাখলেই হয়ে যাবে। মুরগি হলে কুকারে দেবেন না। সিদ্ধ হয়ে গেলে মাংস জল থেকে তুলে জল ঝরিয়ে নিন। মাংসের জলটা মেপে রাখুন। এক কেজি চাল তিন ভাগ করলে যে পাত্র ভর্তি হয় সেই পাত্রের ৪ ১/২ পাত্র জল চাই। যে টুকু জল কম হবে সেই টুকু মিশিয়ে ঠিক করে রাখুন। যদি কুকারে না করেন তাহলে পাঁচ পাত্র জল দরকার হবে।
এবার পাত্রে ২৫০ গ্রাম তেলতেল রান্নার একটা অবশ্য প্রয়োজনীয় উপাদান। রান্নার তেল অনেক রকম হয় যেমন সরষের তেল, বাদাম তেল, সূর্যমুখীর তেল, সোয়াবিনের তেল, রাইসঅয়েল। সরষের তেল ছাড়া অন্য তেলগুলিতে রং বা গন্ধ বিশেষ থাকে না। তাই কোনো বিশেষ রান্না ছাড়া সব রান্নাতে সাদা তেলই ভাল। বর্তমানে স্বাস্থ্যের কারণে ঘি-এর বদলে এই সাদা তেলই ব্যবহার হচ্ছে। More চড়ান। জল ঝরানো মাংসগুলো ভেজে তুলে রাখুন। সব মাংস তেলে এক সঙ্গে ছাড়বেন না। একটা দুটো করে ভেজে তুলে রাখুন। এবার যে তেলতেল রান্নার একটা অবশ্য প্রয়োজনীয় উপাদান। রান্নার তেল অনেক রকম হয় যেমন সরষের তেল, বাদাম তেল, সূর্যমুখীর তেল, সোয়াবিনের তেল, রাইসঅয়েল। সরষের তেল ছাড়া অন্য তেলগুলিতে রং বা গন্ধ বিশেষ থাকে না। তাই কোনো বিশেষ রান্না ছাড়া সব রান্নাতে সাদা তেলই ভাল। বর্তমানে স্বাস্থ্যের কারণে ঘি-এর বদলে এই সাদা তেলই ব্যবহার হচ্ছে। More থাকলো, আশা করা যায় ২০০ গ্রাম মতো থাকবে। যদি তা না থাকে তাহলে আরো দিয়ে তা ২০০ গ্রামের মতো করে নিতে হবে। সেই তেলে তেজপাতা দিয়ে এবার চাল ছাড়ুন। ভাজা ভাজা হলে কিস্মিস্ দিয়ে, আগে মেপে রাখা জল দিন। যদি কুকারে করেন তাহলে স্টিম হলে ঠিক দুমিনিট রেখেই গ্যাস নিভিয়ে দিন। যদি সাধারণ ডেকচিতে করেন তাহলে একটু শক্ত থাকতে নামিয়ে নিতে হবে। এবার ফিনিশিং টাচ।
এটা দুভাবে করা যায়।
এক – ঘিভাতে, ভাজা কাজু, ভাজা মাংস, পোলাও-এর মশলাগুঁড়ো এক টেবিল চামচ, কম আধ কাপ গোলাপ জল, কম আধ কাপ কেওড়ার জল (কারণ বেশি আধ কাপ গোলাপ জল আর কেওড়ার জল চাপের মাংসে পড়বে।)
সব মিশিয়ে ঝাঁকাতে হবে। খুন্তি দিয়ে নাড়ালে সাবধানে নাড়াতে হবে যাতে ঘেঁটে না যায়। ঝাঁকিয়ে মেশালে ভাল হয়। আধ কাপ দুধে জাফরান গুলে ছড়িয়ে দিতে হবে। জাফরান খানিকক্ষণ আগে দুধে ভিজিয়ে রাখতে হয়। সব গন্ধ মিশিয়ে দিলে সামান্য আঁচে বসাতে হয়। ওভেনে দিতে পারলে ভাল হয়। ওভেন না থাকলে সব জায়গায় সমান গরম পাবে এমন ভাবে রাখতে হবে। আগেকার দিনে উপরে নিচে কাঠকয়লার আগুন দিত।
দুই – কোন একটা ডেকচিতে এক স্তর ভাত, তার উপরে কাজু, মাংস ছড়ানো। আবার এক স্তর ভাত। আবার এক স্তর কাজু, মাংস ছড়ানো। এইভাবে সাজাতে হবে প্রত্যেক স্তরে একটু করে পোলাও-এর গুড়ো মশলাও ছড়াতে হবে। সাজানো হলে, গোলাপ জল, কেওড়ার জল, জাফরান গোলা দুধ উপর থেকে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে কেউ কেউ খোয়া ক্ষীরও গুঁড়িয়ে ছড়িয়ে দেয়। এই ভাবে সাজানো হলে, আগের মতো আবার কম আঁচে বসাতে হবে।