ধোঁকার ডালনা

ধোঁকার ডালনা

প্রথমে ধোঁকার কথা বলি। ১০০ গ্রাম ছোলার ডাল আর ১০০ গ্রাম মটর ডাল নিতে হবে। সারারাত অর্থাৎ দশ-বারো ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভালভাবে ভিজে গেলে মিহি করে বেটে নিতে হবে। ধোঁকার ডাল হাত ঘুরিয়ে ফেনাতে হয় না, তাতে করে বেশি ভেঙ্গে যায়। আজকাল গ্রাইন্ডারে বেটে নেওয়া যায়। গ্রাইন্ডারে বাটবার সময় ডালটা ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে আর খুব ফেনিয়ে যায়। তাই গ্রাইন্ডারে বাটার পরে মশলা মেশানোর সময় ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে ঘোরাতে হবে। যাইহোক বাটা হলে এতে নুন, চিনি, ঝাল মেশাতে হবে। যারা হিং ভালবাসেন তাঁরা এতে একটা গোল মরিচের সমান হিং মেশাতে পারেন।

এবার কড়ায় একটু পরিমাণ তেল (২ টেবিল চামচ) দিয়ে উনুন জ্বেলে দিন এবং  এই ডাল বাটা ঢেলে দিয়ে ভাল করে কষে নিন। দেখবেন খুব যেন শুকিয়ে না যায় তাতে চৌকো চৌকো বড়া গড়তে গেলে ভেঙে যাবে। একটা থালায় অল্প তেল দিযে সারা থালাটা তৈলাক্ত করে তাতে গরম কষা ডালবাটা ঢেলে দিয়ে চাপ দিয়ে ২০/২৫ মি.মি. উঁচু করে চেপ্টে নিন এবং হাতে করে একটা চৌকন মাপের করে ছুরি দিয়ে সাইজ মতো কেটে ছোট ছোট ৩০/৩৫ মি.মি. করে কেটে নিন এবং আলাদা আলাদা করে চারপাশ অল্প চাপ দিয়ে (যাতে ভাজার সময় ধারগুলো ভেঙে না যায়) চৌকো চৌকো বড়ার মাপে করে রাখুন। এই সময় হাতে একটু জল দিয়ে নেবেন তাতে গড়তে সুবিধে হবে। কড়া ধুয়ে নিয়ে আবার উনুনে বসিয়ে গরম করে ভেতরের জল শুকিয়ে নিয়ে একটু বেশি তেল দিয়ে বড়াগুলো একটু কড়া করে ভেজে নিন। ভাজবার সময় একটু বেশি আঁচে ভাজবেন নচেৎ ভেঙে যেতে পারে। তবে কখনই অতিরিক্ত আঁচে রান্না ভাল হয় না। ধোঁকাগুলো ভেজে অন্য পাত্রে রাখুন।

আজকাল বাজারে রেডিমেড পাউডার ধোঁকা, ইডলি, ধোসা তৈরি করার জন্য পাওয়া যায়। এটা ব্যবহার করা যায়। অনেকে ডাল ভিজানো, বাটা ইত্যাদি ঝামেলা নিতে চান না তাঁরা এই পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। অনেকে এই পাউডার কিংবা সাধারণ ব্যাসন ঘন করে মেখে নিয়ে জলের ভাপে সিদ্ধ করে নেয়। তারপর টুকরো টুকরো করে ভাজে। এতে ধোঁকা শক্ত হতে পারে এবং অতটা সুস্বাদু হয় না।

এবার ডালনা তৈরি করতে হবে। ১০০ গ্রাম করে মটর আর ছোলার ডাল নিলে প্রায় ২০টা ধোঁকা হতে পারে। তাই ৪০ টুকরো আলু (তা প্রায় ৫০০ গ্রাম হতে পারে) নিতে হবে। বড় বড় চৌকো করে কাটা আলু নিতে হবে।

মশলা:

হলুদ, জিরে, আদা, লঙ্কা, গরম মশলানুন, চিনি তেল, অল্প ঘি, ফোড়নের জন্যে আলু, জিরে, তেজপাতা।

প্রণালী:

কড়ায় ধোঁকা ভাজার পর একটু তেল থাকবে। যদি বেশি থাকে কমিয়ে, মাঝারি মাপের রেখে কড়ায় জিরে, তেজপাতা ফোড়ন দিন। আলু ছেড়ে ভাজুন। নুন দিয়ে ভাজবেন। ভাজা ভাজা হলে হলুদ, জিরে, আদা, লঙ্কা বাটা অথবা গুঁড়ো দিয়ে কষুন। আলুর পরিমাণে যা মশলা দরকার মনে হবে তার থেকে একটু বেশি মশলা দেবেন। কারণ পরে ওতে ধোঁকাগুলো পড়বে। কষা হলে জল দিয়ে সিদ্ধ করুন। জল একটু বেশি দেবেন যাতে আলু সিদ্ধ হওয়ার পর একটু ঝোল ঝোল থাকে। আলু সিদ্ধ হলে চিনি যদি টমাটোর সস্‌ থাকে এক টেবিল চামচ সস্‌, ঘি, গরম মশলা দিয়ে ফোটান। সব ভালভাবে মিশে গেলে, নামানোর একটু আগে ধোঁকা ভাজাগুলো দিয়ে নামান। ধোঁকা দেওয়ার পর বেশি নাড়বেন না। ধোঁকা ভেঙ্গে যেতে পারে।